ডায়েরির কারগুজারী
নিজের বিশ্বাস, চিন্তা ও আদর্শের কথা জনসমাজে প্রচারের বিশেষ অবলম্বন হচ্ছে বক্তৃতা ও ভাষণ। আরবী ও উর্দুতে একে বলে ‘ওয়াজ’, ‘বয়ান’, ‘খুতবা ইত্যাদি। ইংরেজীতে বলে “লেকচার’। যার সারকথা হল গােছানাে শিল্পময় হৃদয়গ্রাহী কথামালা। যা শুনে শ্রোতাবৃন্দ আকৃষ্ট হন। আর আকৃষ্ট হলেই তার শ্রবণেন্দ্রিয়ের পথ বেয়ে বিছু কথা ভেতরে চলে যায় এবং বদ্ধমূল হয়ে যায় মস্তিষ্কের পরতে পরতে।
আমরা যারা ইসলামের ‘দাঈ বা প্রচারক, তাদের জন্য এ মাধ্যমটি বেশ উপকারী। এর মাধ্যমে খুবই দ্রুততম সময়ে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে ইসলামের মহান আদর্শের বাণী পৌছে দেয়া সম্ভব। কুরআন ও হাদীসে সরাসরিভাবে এ মাধ্যমটুকু সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করার হুকুম করা হয়েছে। আর এর বাস্তবতা ও সুফল দিবাকরের মতাে সুস্পষ্ট। আখেরী নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরবের কাফের-মুশরিকদেরকে তাদের আজীবন লালিত ভ্রান্ত বিশ্বাসের ভাগাড় থেকে ইসলামের শাশ্বত বিশ্বাসের আলােকিত মঞ্চে তুলে এনেছিলেন এই বক্তৃতার জাদুতেই। ওকা” বাজারে সমবেত জনতার সামনে প্রদত্ত তার মুক্তাদানা সদৃশ বক্তৃতা ও তার প্রতিক্রিয়ার কথা সকলেরই অল্প-বিস্তর জানা আছে। তার সেই আলােকিত বক্তৃতার জাদুতে মােহাবিষ্ট হয়ে আরবদের ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার যে হিড়িক পড়েছিল, তা ঠেকানাের জন্য মুশরিক নেতৃবর্গ মানুষকে বাধা পর্যন্ত দিয়েছে। কী পরিমাণ প্রভাব পড়লে প্রতিরােধের ব্যবস্থা নিতে হয়! আর নিকট অতীতে উপমহাদেশের মাটিতে অবেধ দখলদার বৃটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আলিমসমাজ যে অপূর্ব গণজাগরণ সৃষ্টির প্রয়াস পেয়েছিলেন, তাও এই বক্তৃতার মাধ্যমেই। গত ১২-১২-১২ তারিখকে স্মরণীয় করে আমাদের এতিম বানিয়ে যে মুফতী ফজলুল হক আমিনী চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে, তাঁর অগ্নিময় বক্তৃতা তাে ছিল প্রবাদতুল্য। এক-দুই মিনিটে হাতেগােনা কয়েকটি বাক্যেই তিনি জনতার বােধ-বিবেকে আগুন জ্বালিয়ে দিতেন! বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক বলয় পর্যন্ত দীনী মঞ্চ-মাহফিলের উজ্জ্বল আলােকবর্তিকা মুনাজিরে আজম আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী সাহেব সমকালীন বাতিল মতবাদসমূহের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে। যাচ্ছেন এ বক্তৃতা নাম হাতিয়ারটির সদ্ব্যবহার করে। তার যুক্তিপূর্ণ হৃদয়গ্রাহী বয়ান-বক্তৃত জাদুর মতাে কাজ করছে। আরও অজস্র উজ্জ্বল উদাহরণ রয়েছে অতীত ও বর্তমানের গর্ভে।
Reviews
Reviews
Clear filtersThere are no reviews yet.